ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ও পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলি...
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ও পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশ। তবে বিশেষ ক্ষমতা আইনের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ছয়মাস তদন্ত শেষে গত ৯ এপ্রিল আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয়।
মামলায় সাংবাদিক ইলিয়াস পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত অন্য দুই আসামি হলেন- বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু ও বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. রবিউল ইসলাম বিষয়টি জাগো নিউজে নিশ্চিত করেছেন। আগামী ২৭ এপ্রিল মামলার দিন ধার্য রয়েছে। এদিন আদালতে এ চার্জশিট উপস্থাপন করা হবে। এ মামলার বিচার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হবে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আসামি ইলিয়াস হোসাইন তার ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেল থেকে এসপি বাবুল আক্তারের অডিও কথপোকথন ফাঁস করেন। আর বাবুলের ভাই লাবু ও বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মানববন্ধন করেন। এতে তারা বাবুল আক্তারের মুক্তি চেয়ে মানহানিকর তথ্য ছড়ান। আসামি বাবুল আক্তারের সহযোগিতায় ওই সব তথ্য-উপাত্ত আসামি ইলিয়াসের কাছে পাঠানো হয়। পরবর্তীসময়ে আসামি ইলিয়াস অডিও তথ্য ফাঁস করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(২), ২৮(২), ৩১(২) ও ৩৫(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। তবে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৬(২) ও ২৫(ঘ) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়নি।
২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ আনা হয়। ওই বছরের ১০ নভেম্বর বাবুল আক্তারকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ মামলায় বাবুল আক্তারের ভাই লাবু ও বাবা ওয়াদুদ জামিনে রয়েছে। তবে সাংবাদিক ইলিয়াস পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী বনজ কুমার মজুমদার উল্লেখ করেন, তার নেতৃত্বাধীন তদন্ত সংস্থা পিবিআই দেশের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলা তদন্তাধীন থাকাকালে প্রধান আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের নাম বেরিয়ে এলে তাকে গ্রেফতার করে। কিন্তু মিতু হত্যার মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে নিতে এবং পুলিশ ও পিবিআইয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে জেলে থাকা বাবুল আক্তার ও অন্য আসামিরা দেশ-বিদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক বিভিন্ন অপকৌশল এবং ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেন।
এরই ধারাবাহিকতায় একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তার ও অন্য আসামিদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্ররোচনায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন তার ইউটিউব চ্যানেলে ‘স্ত্রী খুন স্বামী জেলে খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে একটি ভিডিও আপলোড করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে ইলিয়াস হোসাইন ভিডিওতে প্রচারিত বক্তব্যে দেশের ভাবমূর্তি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উসকানি, বাংলাদেশ পুলিশ এবং পিবিআই ও বিশেষ করে বাদীর (বনজ কুমার মজুমদার) মান-সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেছেন। যা দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করেছে।
এজাহারে ওই ভিডিওর বিভিন্ন অভিযোগ খণ্ডণ করে বলা হয়, ইলিয়াস তার বক্তব্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করা, রাষ্ট্রের হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা-বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপপ্রয়াস করেছেন।
এতে আরও বলা হয়, শুধু মিতু হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারকাজ প্রশ্নবিদ্ধ করতে মামলার ২ নম্বর আসামি মো. হাবিবুর রহমান লাবু, ৩ নম্বর আসামি আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া ও ৪ নম্বর আসামি বাবুল আক্তারের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্ররোচনায় ১ নম্বর আসামি ইলিয়াস হোসাইন মিথ্যা-বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুক-ইউটিউবে দেন।
জেএ/এএএইচ
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/yQvmpON
https://ift.tt/bBNTnvc
COMMENTS