◾আবদুল হাই রাহাত,অনিবার্ণ নিউজ.কম ডেস্ক◑ বিভিন্ন ধরনের বিশ্বরেকর্ডের কথা শুনলেও বিয়ে করে কেউ বিশ্বরেকর্ড করেছেন এমন ঘটনা বিরল। তবে সম্প্রতি ...
◾আবদুল হাই রাহাত,অনিবার্ণ নিউজ.কম ডেস্ক◑ বিভিন্ন ধরনের বিশ্বরেকর্ডের কথা শুনলেও বিয়ে করে কেউ বিশ্বরেকর্ড করেছেন এমন ঘটনা বিরল। তবে সম্প্রতি গিনেস বুক অব রেকর্ডস জিওভানি ভিগ্লিওট্টো নামের এক ব্যক্তিকে এই স্বীকৃতি দিয়েছে। জিওভানি ভিগ্লিওট্টো ২৭টি মার্কিন রাজ্য এবং ১৪টি দেশের ১০৫ জন নারীকে বিয়ে করছিলেন।
তবে কোনো স্ত্রীর সঙ্গেই তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। প্রতিবারই তিনি আলাদা জাল পরিচয় ব্যবহার করেন। এমনকি জানা যায়, জিওভানি ভিগ্লিওট্টো তার আসল নাম নয়। শেষ যে বিয়েটি করেছিলেন সেখানে এই নাম ব্যবহার করেছিলেন তিনি। ১৯৪৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি তার বিয়ের কাজ চালিয়ে গেছেন।
আরও পড়ুন: ৪৬ ঘণ্টা ফোনে কথা বলে বিশ্বরেকর্ড
বিভিন্ন মার্কেটে কিংবা পার্কে নারীদের সঙ্গে ভাব জমাতেন জিওভানি। কথার জালে নারীদের মন আটকাতে ওস্তাদ ছিলেন বলা যায়। ভাব জমানোর পর তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেন এরপর বিয়ের প্রস্তাব দিতেন। নিজেকে ব্যবসায়ী কখনোবা বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত আছেন বলেই পরিচয় দিতেন। দূর থেকে সেই এলাকায় ঘুরতে বা অফিসিয়াল কাজে এসেছেন বলেই জানাতেন তাদের।
এরপর সেই নারীকে বিয়ের পর তাদের টাকা-পয়সা, মূল্যবান সম্পদ নিয়ে উধাও হয়ে যেতেন। তার আরও একটি কৌশল ছিল পালানোর। সেটি হচ্ছে, বিয়ের পর পরই স্ত্রীকে বলতেন সব কিছু গুছিয়ে তার সঙ্গে তার এলাকায় এসে থাকতে। স্বাভাবিকভাবেই সবাই রাজি হতেন তার কথায়। সব জিনিসপত্র গুছিয়ে ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যেতেন জিওভানি। স্ত্রীদের ট্রেনের টিকিট কেটে দিতেন। এরপর সব কিছু নিয়ে নিরুদ্দেশ হতেন। সেসব জিনিস তিনি বিক্রি করে দিতেন পুরোনো মার্কেটে।
এমন প্রতারণার খবর এখন হরহামেশাই জানা যায় খবরের পাতায়। কিন্তু সেসময় জিওভানির এমনভাবে প্ররতারণার কথা খুব বেশি মানুষ বুঝতে পারেননি। দেখতে সাধাসিধা হওয়ায় যেখানেই যেতেন সবাই খুব ভালোবাসতেন। এমনকি এমনভাবে নিজের পরিচয় পাল্টে ফেলতেন যে তার আগের এসব অপকর্মের কথা কেউ ভাবতেও পারত ন
অবশেষে ১৯৮১ সালের ২৮ ডিসেম্বর ফ্লোরিডায থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন তার সর্বশেষ স্ত্রী অ্যারিজোনার বাসিন্দা প্যাট্রিসিয়ান অ্যান গার্ডিনা। যাকে তিনি বিয়ে করেছিলেন সে বছরের ১৬ নভেম্বর।
১৯৮৩ সালের জানুয়ারিতে জিওভানি ভিগ্লিওটোর বিচার শুরু হয়। জিওভানি জানান, তার জন্ম ১৯২৯ সালের ৩ এপ্রিল সিসিলির সিরাকুসায়। তার আসল নাম নিকোলাই পেরুসকভ। তবে আদালতে প্রসিকিউটর দাবি করেছিলেন যে ভিগ্লিওট্টোর আসল নাম ফ্রেড জিপ। তার জন্ম ১৯৩৬ সালের ৩ এপ্রিল নিউ ইয়র্ক সিটিতে।
জিওভানির বিরুদ্ধে তার কয়েকজন স্ত্রী সাক্ষী দিয়েছিল। তার ভিত্তিতে ৩৪টি প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হয় জিওভানির বিরুদ্ধে। আদালত মোট ৩৪ বছরের কারাদণ্ড ও ৩ লাখ ৩৬ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করে। তবে এই শাস্তিতে সন্তুষ্ট ছিলেন না অনেকেই। সবাই চাইছিল জিওভানির ফাঁসি হোক।
এরপর আট বছর জিওভানি ছিলেন অ্যারিজোনা রাজ্য কারাগারে। সেখানেই ১৯৯১ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা যান তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জিওভানি স্বীকার করতেন তার একমাত্র অপরাধ ছিল নারীদের প্রতি দুর্বলতা।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড
COMMENTS